মহিনুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী প্রতিনিধি॥৭০বছরের বৃদ্ধ বদ্ধিউজ্জামান, ৪ ইঞ্চি ছোট একটি পা তার তাই একটি লাঠিতে ভর করে কষ্ট করে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলতে হয় তাকে। এভাবেই প্রতিনিয়ত তিনি হেটে-হেটে গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে বিক্রি করেন বিভিন্ন শাক সবজি।অনেক অভাবেও তিনি ভুলেও ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নেননি।
শাক সবজি বিক্রি করে সামান্য আয়ে কোনমতে চলে তার ছোট সংসার।এত অভাবের পরও গত ৮বছর আগে কুড়িয়ে পাওয়া একটি শিশুকে সযত্নে লালন পালন করছেন তিনি। অসহায় শিশুটিকে আশ্রয় দিয়ে তার নাম রেখেছেন জীবন। তার যেনো বেশি কিছু প্রয়োজন ছিলনা।শুধু প্রয়োজন একটি ভ্যানের।তার মতে,যাতে সেই ভ্যানে করে তিনি বিভিন্ন হাট-বাজারে শাক সবজি রেখে বিক্রি করে জীবনে কিছুটা প্রশান্তি পান।
নীলফামারীর সৈয়দপুরের অনলাইন এক্টিভিটিস্টদের দ্বারা সোস্যাল মিডিয়ায় এভাবে উঠে আসে সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শ্বাষকান্দর তেলতেলা পাড়ার বাসিন্দা বদিউজ্জামানের কষ্টের জীবনের কিছু কথা ও তার ছবি।
এমন খবর জেনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে আসেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম.গোলাম কিবরিয়া। বুধবার রাতেই সেই বৃদ্ধ’র ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য সৈয়দপুরের স্বেচ্ছাসেবকদের পাঠান তিনি।
এবং কষ্ট করে হেটে আর যাতে শাকসবজি বিক্রি করতে না হয় তার জন্য সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী বদিউজ্জামানকে একটি ভ্যান ও নগদ অর্থ প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার (৪এপ্রিল) উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরেই প্রতিবন্ধী বদিউজ্জামানের হাতে ভ্যান ও নগদ ২ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান মন্ডল ও অনলাইন এক্টিভিটিস্ট নওশাদ আনসারী, আলমগীর হোসেন, সুলতান, মোরসালিন ও সৈয়দপুরকে সিটি কর্পোরেশন চাই আন্দোলনের আহবায়ক তামিম রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্যঃ-নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শ্বাষকান্দর তেলতেলা পাড়ার প্রতিবন্ধী বদিউজ্জামান তার স্ত্রী ফাতেমা ও দুই ছেলে ফজলু, শরিফুলকে নিয়ে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকেন। ছেলে দুটি দিন মজুরীর কাজ করলেও সে আয়ে সংসার চলে না বলে ৭০ বছর বয়সেই খোড়া পায়ে ভর করেই সামান্য রোজগারের জন্য শাক সবজি বিক্রির জন্য সাঁজ সকালে বেরিয়ে যান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস.এম.গোলাম কিবরিয়া জানান, বদিউজ্জামানের মত মানুষের জন্য সামাজিক মুল্যবোধ থেকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সব সময় এগিয়ে আসার চেষ্টা করে থাকি।তিনি এখন থেকে কাধে শাক সবজির বোঝা না নিয়ে যাতে ভ্যানে করে বিক্রি করতে পারে তাই তার জন্য ভ্যান ও কিছু অর্থের ব্যবস্থা করেছি মাত্র। এভাবে মানুষের পাশে সব সময় উপজেলা প্রশাসন থাকবে বলেও জানান তিনি।