স্টাফ রিপোর্টার : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৪ হাজার ২৫০ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সন্ধ্যা নাগাদ আরও প্রায় ২৫ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। শুক্রবার (৩ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সর্বশেষ অবস্থা ও প্রস্তুতি বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ‘শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নেভি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, স্বেচ্ছাসেবক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা একযোগে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৪ হাজার ২৫০ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় এক লাখ, সাতক্ষীরায় ১২ হাজার, বাগেরহাটে ৪০ হাজার, পিরোজপুরে ৬ হাজার, বরগুনায় ৮০ হাজার, পটুয়াখালীতে ৩৭ হাজার ৫০০, বরিশালে ৫ হাজার, ভোলায় ৩৫ হাজার, নোয়াখালীতে ১৫ হাজার, লহ্মীপুরে ১২ হাজার, ফেনীতে ৫ হাজার, চট্টগ্রামে ২০ হাজার, কক্সবাজারে এক হাজার, ঝালকাঠিতে ১০ হাজার, চাঁদপুরে ৫ হাজার, শরীয়তপুরে ৮ হাজার, মাদারীপুরে ৪ হাজার লোক রয়েছে। এটা (মানুষ নিয়ে আসা) সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। যারা ঝুঁকিতে আছেন তাদের আনা হচ্ছে। আমাদের অভিজ্ঞতা হলো ফাইন্যালি ২১ থেকে ২৫ লাথ লোককে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৪ হাজার ৭১টি’।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়াও উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।