খবর সারাদিন রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে লকডাউনের মধ্যেই প্রখ্যাত মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষ জমায়েত হওয়ায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ এএসপি সার্কেলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে তাদের প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহার করে নেওয়া কর্মকর্তারা হলেন সরাইল থানার সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মাসুদ রানা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন টিটু এবং ওসি (তদন্ত) নূরুল হক। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, শনিবারের ঘটনা তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে, এক সঙ্গে লাখো মানুষ জমায়েত হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ টি গ্রামকে লক ডাউন করা হয়েছে। এসব গ্রামের সকল বাসিন্দাদের হোমকোয়ারেন্টাইনের থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা ও চালানো হয়েছে। আগামী ১৪ দিন তারা হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকবে। লকডাউনে থাকা বাসিন্দাদের দাবী প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা তারা জানেন নি। রবিবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোষ্ট বসিয়ে পুলিশ যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যাত্রীরা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পায়ে হেঁটে পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ, মাধবপুর, ভৈরব ও নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। এছাড়া ১১ এপ্রিল থেকে লক ডাউন শুরু হলে ও রবিবার শহরে যানবাহন এবং জনসাধারণের চলাচল অনেকটাই বেড়েছে।
ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল- মামুন সরকার জানান, লকডাউন চলাকালে ওই গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের খাদ্য সহায়তা দিতে দলীয় নেতাকর্মীদের জানানো হয়েছে। গনজমায়েতের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঝুঁকি বেড়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা ঝুঁকির মাত্রা বাড়ল!
অনুজীব করোন ভাইরাস। বিশ্বব্যাপী আতংকের নাম। এ পর্যন্ত দেড় লাখের বেশী মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। দেশের সিকি কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা লকডাউন করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ১১ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে লক ডাউনের আওতায় আনা হয়। গত ১৮ এপ্রিল দেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাযা অনুষ্ঠিত হয় জেলার সরাইল উপজেলার বেড়তলা জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে। মাদ্রাসা মাঠ ভরে মানুষের ঢল উপচে পড়ে। এক পর্যায়ে ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে। যাতে অসামাজিক দূরুত্ব ছিল অনুপস্থিত। এ নিয়ে সারা দেশে হৈচৈ শুরু হয়। চলতি অবস্থায় সকলের মাঝে সবত্র উৎকন্ঠা আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তজার্তিক গণমাধ্যম গুলো ফলাও করে এ সংবাদ প্রচার করে। আকষ্কিক এই গণজমায়েতে হতভম্ব চিকিৎসরাও। জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেল। আমরা চিন্তিত। রোববার গণমাধ্যম কর্মীদের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ্ দাবি করেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর জন্য ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে গেল। তাই ৮টি গ্রামের সকল বাসিন্দাদের হোম কোয়ান্টিনে থাকার জন্য জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ও এ জন্য প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছে। সে সাথে স্বাস্থ্য কর্মীদের গ্রাম গুলোকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি কোন বাসিন্দাদের জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দেয়ার সাথে সাথে তাক্ষনিক চিকিৎসকের কাছে পাঠানোর কথা জানান তিনি।
শেয়ার করুন