মো.জুয়েল মিয়া,আখাউড়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নাজু মিয়া হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শেখ মার্কেট এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে এলাকাবাসী অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি থেকে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানানো হয়।
নিহত নাজু মিয়ার পিতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন, মা আমেনা বেগম, নাজু মিয়ার স্ত্রী রাবেয়া বেগম, মেয়ে লিমা, লিজা, নিপা ও ছেলে মানিক বলেন, ‘বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আনোয়ার, খোকন, রাসেল ও তার সহযোগীরা নাজুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। রাসেল গ্রেফতার হলেও হত্যা মামলার অন্য দুই পলাতক আসামী আনোয়ার হোসেন ও খোকন মিয়াকে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানায়।’
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৪ জুলাই দুপুরে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মিনারকুট গ্রামের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মো. নাজু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রথমে আখাউড়া থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে নিহত নাজুর বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেন। পিবিআইয়ের এসআই মিজানুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে আট মাস পর বের করেন হত্যাকাণ্ডের রহস্য। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে সোপর্দ করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানায়, নাজু মিয়াকে ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাদক ক্রয় ও পরিবহনের কাজে ব্যবহার করতো রাসেল মিয়াসহ স্থানীয় একটি মাদক চোরাচালান চক্র। ঘটনার কিছুদিন আগে নাজু মিয়া অগ্রিম টাকা নিয়ে মাদক সরবরাহ করেনি। সে মাদক চোরাচালানের তথ্য পুলিশের কাছে ফাঁস করে দিতে পারে এ সন্দেহে রাসেল মিয়া ও তার সহযোগীরা নাজু মিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে ভারতীয় সীমান্তের কাছে নিয়ে হত্যা করে। পরে নাজুর লাশ ফেলে দিয়ে মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান,‘জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল মিয়া নাজুকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। নিহত নাজুর বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
শেয়ার করুন