খবর সারাদিন রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সম্প্রতি নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায় গত ৩ আগস্ট ২০২১ তারিখে বিজয়নগর থানায় জৈনক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী রেহানা বেগম নিজে বাদী হয়ে বর্তামান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলাটি করেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মির্জা হাসান। মামলায় উল্লেখ করা হয়, জামাল চেয়ারম্যানের ছতুরপুর গ্রামের বাড়ির পাশে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী রেহানা বেগমের স্বামী দীর্ঘদিন ধরে বিদেশ থাকেন। এই সুযোগে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জামাল উদ্দিন ভুঁইয়া ও তার বাহিনী রেহানা বেগমকে ঘরের বাইরে নানান সময়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে আসছে এবং নানান কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। তারা রেহেনা বেগমকে নিজ বসতঘরে তালাবদ্ধ রেখে অবরুদ্ধ করে বাড়িতে যেন কেউ আসতে না পারে বাড়ির চারপাশে চেয়ারম্যানের লোকজন পাহারায় রাখে। এসময় চেয়ারম্যান ঐ গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা চালান এবং হুমকি দিয়ে বলেন যদি এঘটনায় থানায় মামলা করা হয় তাহলে রেহেনাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।
এসব ঘটনার সত্যতা জানতে সাংবাদিকগণ তার মুখোমুখি হলে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও চক্রান্তের শিকার। যে মহিলাটি আমার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে সে এলাকায় একজন দুশ্চরিত্রা মহিলা হিসেবে পরিচিত। অতীতেও তার বিভিন্ন কেলেঙ্কারির ঘটনা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ নিষ্পত্তি হয়েছে। সম্প্রতি আমার একটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বরাবরই যারা আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে সচেষ্ট, তারাই ওই মহিলাটিকে ব্যবহার করে আমার নামে এই মিথ্যে মামলাটি দায়ের করে। মামলায় বলা হয়েছে আমি মাদকাসক্ত। আমি স্পষ্ট বলতে চাই আমি বরাবরই মাদক সেবন বা ব্যবসার বিরুদ্ধে। প্রয়োজনে আমার রক্ত পরীক্ষা করা হোক। অতীতে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার কারণে আমি আমার আপন চাচাতো ভাইকে রেহাই দেইনি। আমি নিজে মাদক গ্রহণ বা ব্যবসার প্রশ্নই উঠে না। আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মেডিকেল টেস্ট করা হলে সেই মেয়েটিই যে দুশ্চরিত্রা এমন প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি মনে করি পুলিশ প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে এটির সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে আমি নির্দোষ বলে প্রমাণিত হবো। জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া আরো বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার নামে নানান ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ ও অসত্য তথ্য প্রদান করে আমার মানহানি ও চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমি বিজয়নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করতে চাইলে পুলিশ মামলাটি আমলে নেয়নি। তাদেরকে মামলা নিতে বললে তারা তদন্ত প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানায়। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের আচরণের মাধ্যমে আমি বুঝতে পারছি যে আমার সাথে ন্যায় বিচার করা হচ্ছে না। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবার কাছে দাবি জানাই যেন এই ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
এসব বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিজয়নগর থানার ওসি মোহাম্মদ মির্জা হাসান বলেন, চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়া আমার কাছে কোন ধরনের অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে একজন ভুক্তভোগী নির্যাতিত মহিলা ওই চেয়ারম্যানের নামে একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে। আমরা মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করছি।