জীবন নামের গোলক ধাঁধায় আমাদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। জীবনে চলার পথে যেমন ভালো সময় আসে তেমনি খারাপ সময়ও আসে। আর এ খারাপ সময়টাকে খারাপ না ভেবে এই খারাপের পেছনে নিশ্চয়ই ভালো কিছু আছে এভাবে ভাবতে হবে। আর এ ভাবনায় হচ্ছে ইতিবাচক চিন্তা। মূলত, ইতিবাচক চিন্তা হচ্ছে এমন এক মানসিক ধারণা পোষণ করা যা কখনো হতাশাকে প্রশ্রয় দেয় না। যেকোন খারাপ পরিস্থিতিতেও আশাহত না হয়ে আশার আলো দেখা, সমস্যায় সমাধান খোঁজা।
আপনার জীবন যেমন, সেভাবেই উপভোগ করার চেষ্টা করুন। নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। নিজের সাথে খারাপ কিছু ঘটে গেলে কিংবা অপ্রত্যাশিত দূঃখ পেলে হতাশ না হয়ে নিজেকে সময় দিন। নিজেকে বুঝার চেষ্টা করুন। সময়ে সময়ে রিলাক্স করুন। কারণ কখনও কখনও সমস্যার মোকাবেলা করার সর্বোত্তম উপায় হলো আরাম। পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে দুইবার ঘটে, একবার কল্পনায় আর একবার বাস্তবে। মানুষ যা কিছু করে তার আগে সে চিন্তা করে। চিন্তা যেমন হবে কাজও তেমন হবে। একটি কাজ বারবার করলে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। অভ্যাসের সমষ্টি তার চরিত্র এবং চরিত্রই নিয়ে যাবে তার গন্তব্যে। অর্থাৎ একজন মানুষের গন্তব্য সুখের জায়গায় নাকি দূঃখের জায়গায় হবে তা নির্ভর করবে তার চরিত্রের উপর। চরিত্র নির্ভর করে অভ্যাসের উপর আর অভ্যাস নির্ভর করে কর্মের উপর। সুতরাং চিন্তা যেমন হবে বাকি সব ধাপ তেমনি হবে। যে কোন অবস্থায় সঠিক চিন্তা করতে পারায় হচ্ছে ইতিবাচক চিন্তা। সঠিক চিন্তা বেঠিক নয়। এখন প্রশ্ন হলো সঠিক চিন্তা বলতে কি বুঝাই? সঠিক চিন্তা হলো যা কিছু ঘটেছে সেই ঘটনাকে ওইভাবেই দেখা এবং যা ঘটেছে তা ঘটার মতো করেই দেখা। ধরুন, প্রচণ্ড গরমে ভরদুপুরে আপনি রাস্তায় আপনি জ্যামে আটকে আছেন, খুবই বিরক্তিকর এবং অস্তিত্বকর অবস্থা। এটা বিরক্তিকর না ভেবে স্বাভাবিক ভাবুন এবং মনে করুন আপনি জ্যামে নয় একটা গাড়ির শো-রুমে আসছেন গাড়ি কিনতে। গাড়ির রং, ডিজাইন, ব্রান্ড এসব নিয়ে ভাবুন সময় কীভাবে কেটে যাবে টেরই পাবেন না। বিরক্তি তো দূরে থাক।
যদিও সবসময় সম্ভব হয় না, মন আহত থাকে ভারী হয়ে থাকে। তখন হাসতে থাকুন। নকল হাসিও ভেতরের চাপা কষ্ট হালকা করে। হাস্যরসবোধ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নতুন ধারণা দেয়। সারারাত দুশ্চিন্তায় না কাটিয়ে ইউটিউবে অন্তত হাসির কিছু ভিডিও দেখে সময় পার করা ভালো। কার্টুন সিরিজ দেখা যেতে পারে এতে প্রচুর হাসির উদ্রেক হয় যা স্বাস্হ্যের জন্য খুবই ভালো। যারা ধর্মপ্রাণ আছেন ইবাদতে রাত কাটিয়ে মনে শান্তি আনতে পারেন।
নিজের কষ্টের সময় গুলোতেও হাসুন। নিজের দূর্ভাগ্যের জন্যও হাসুন। হাসতে জানতেই হবে। কারণ নেদারল্যান্ডসের ব্রেডার বাসিন্দা অ্যাড ডি লিও বলেছিলেন, “” দূর্ভাগ্যের চেয়ে বড় বিনোদন আর কিছু নেই।””
নিজের সাধ্যমত কাউকে সাহায্য করতে পারলে কিংবা উপকার করতে পারলে মনে প্রশান্তি আসে এবং ইতিবাচক ধারণা আসে নিজের প্রতি। এটা যে সবসময় আর্থিক হতে হবে এমন নয়,,, হতে পারে শ্রম দিয়ে, ভালো আইডিয়া দিয়ে বা কাউকে সময় দিয়ে।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলন করুন এবং প্রয়োগ করুন।
শেয়ার করুন