খবর সারাদিন রিপোর্ট : ব্রাহ্মনবাড়িয়া শহরবাসীর দাবির মুখে অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত টাউন খালের দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আজ সোমবার বেলা ১১ টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহামেদ রাসেলের নেতৃতে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚ম) সাইফ-উল আরেফিন ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রশান্ত বৈদ্য খালপাড়ে টান বাজার এলাকা ও কান্দিপাড়া এলাকায় একযোগে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। অভিযানের প্রথমদিনে টান বাজার এলাকায় খালের পাড়ে অবৈধভাবে নির্মিত এক একটি মার্কটের ১৩টি দোকানসহ কান্দিপাড়া এলাকার ৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।খুজঁ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন দশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহত্যবিহী টান খালের দুইপাড়ে প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মান করেন প্রভাবশালীরা। এতে করে খালটি সংকুচিত হয়ে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
এ অবস্থায় শহরের সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে খালপাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে খালের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল। শহরবাসীর দাবির মুখে গত তিন মাস আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমে খালের পারিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়। পরে শুরু হয় খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিতকরণ কাজ। প্রশাসনেনে পক্ষ থেকে লালদাগ দিয়ে অবৈধ স্থাপনা চহ্নিত করে অবৈধ দখলবাজদেরকে নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ দেয়া হয়। প্রশাসনের নোটিশে অবৈধ দখলবাজরা কর্ণপাত না করায় সোমবার দুপুর থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
এ ব্যাপারে উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বদেয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহামেদ রাসেল বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্র টা্উন খালটি অবৈধ দখলবাজদের কারনে ও খালের মধ্যে শহরের বিভিন্ন দোকান ও বাসা বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারনে ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে । খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার ও খালের দুইপারে অবৈধ দখলবাজদের উচ্ছেদ করার জন্য শহরবাসীরা দাবি জানিয়ে ছিল। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ থেকে খালপারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে ।
খালটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে । আশা করি এই খাল দিয়ে আগের মতো টান বাজার তিতাস নদী থেকে গোকর্ণ নদী পর্যন্ত নৌকা চলাচল করবে।উচ্ছেদ শিকার টান বাজার এলাকার কাপরের ব্যবসায়ী মোঃ বাদল মিয়া বলেন, আমরা খালের পাড়ে জায়গা জেলা পরিষদ থেকে লীজ এনে দোকান নির্মাণ করেছি।
আমাদের লীজ বাতিল করে আমাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য দুইদিন আগে নোটিশ দেয়া হয়েছিল । নূরুল্লাহ নামে অপর এক ব্যবসায়ী জানান, আমরা জেলা পরিষদ থেকে এই জায়গা লীজ এনে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম । এখন আমাদের দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা এখন কোথায় যাব? এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাহি প্রকৌশলী মঞ্জুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। খালের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। খালটি খনন করে পুনরায় সচল করার ব্যবস্থা করা হবে।