খবর সারাদিন রিপোর্ট,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের অভিযানে শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত টাউন খালপাড়ের টান বাজার এলাকা থেকে উচ্ছেদ হওয়া ১৩টি দোকানের মালিকদেরকে ক্ষতিপূরন দেয়া ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের পুর্নবাসনের দাবি জানানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উচ্ছেদ হওয়া ১৩টি দোকান মালিকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উচ্ছেদ হওয়া দোকান মালিক ও শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, তারা জেলা পরিষদ থেকে টাউন খালের টানবাজার এলাকার ওই জায়গা অস্থায়ী লিজ নিয়ে সেখানে আধাপাকা ১৩টি দোকান নির্মান করে ব্যবসা করে আসছিলেন।
টাউন খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য গত ২৭ আগষ্ট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে টানবাজার এলাকার ওই জায়গা থেকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নোটিশ দেয়া হয়।
মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদ তাদের লীজ বাতিল না করা সত্তে¡ও গত ৫ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তাদের মার্কেটটি বেকু দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। যা সম্পূর্ন বে-আইনী ও মৌলিক অধিকার খর্ব করার সামিল। তিনি বলেন, মার্কেটটি গুড়িয়ে দেয়ায় তাদের কোটি টাকার বেশী ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরন দেয়া সহ ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের পুর্নবাসনের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শহরবাসীর দাবির মুখে গত ৫ সেপ্টেম্বর টাউন খালের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন।
অভিযানের প্রথম দিন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ রাসেলের নেতৃত্বে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) সাইফ-উল আরেফিন ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রশান্ত বৈদ্য খালপাড়ের টান বাজার এলাকা ও কান্দিপাড়া এলাকায় একযোগে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন এবং টান বাজার এলাকায় খালের পাড়ে নির্মিত মার্কেটের ১৩টি দোকানসহ কান্দিপাড়া এলাকার ৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরবাসীর দাবির মুখে গত তিন মাস আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমে খালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়। পরে শুরু হয় খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিতকরণ কাজ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে লালদাগ দিয়ে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে অবৈধ দখলবাজদেরকে নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ দেয়া হয়।
প্রশাসনের নোটিশে অবৈধ দখলবাজরা কর্ণপাত না করায় গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
এ ব্যাপারে উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বে দেয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ রাসেল বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রের টাউন খালটি অবৈধ দখলবাজদের কারনে ও খালের মধ্যে শহরের বিভিন্ন দোকান ও বাসা বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারনে ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছিল। খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার ও খালের দুইপাড়ের অবৈধ দখলবাজদের উচ্ছেদ করার জন্য শহরবাসীরও দাবি ছিলো। তাই আমরা খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটিকে পূর্বের অবস্থায় ও খালের নব্যতা ফিরিয়ে আনা হবে। আশা করি এই খাল দিয়ে আগের মতো টানবাজার তিতাস নদী থেকে গোকর্ণঘাট তিতাস নদী পর্যন্ত নৌকা চলাচল করবে।