খবর সারাদিন রিপোর্ট: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ৫ কিলোমিটার লম্বা ঐতিহ্যবাহী টাউন খালটি রক্ষার্থে নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন “নোঙর” ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কমিটির দেয়া খালের সীমানা নির্ধারণ ও সীমানা পিলার স্থাপন, খালপাড়ের দখলদারদের তালিকা তৈরি ও উচ্ছেদ, নদীর গভীরতা সমান খাল খনন ও নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা, সিসি বøক অপসারণ ও রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ এবং খালের দুই পাড়ে পায়ে হাঁটার রাস্তা ও সৌন্দর্য বর্ধনের দাবির ( ৫ দফা দাবি) প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫টি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার বেলা ১১টায় স্থানীয় সুর স¤্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে নোঙর আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ২৫টি সংগঠনের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করা হয়।
নোঙর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের নির্বাহী সদস্য সোহেল আহাদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নোঙর, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন শামস।
বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহবায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. কাউছার এমরান, উদীচী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি জহিরুল ইসলাম স্বপন, খেলাঘর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট অঞ্চল) মোঃ মনির হোসেন, সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা দেলোয়ার।
মত বিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নোঙর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেদা মুন্নী।
মতবিনিময় সভায় বলা হয়, চলতি বছরের ২৪ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষ মাপঝোক করে টাউনখালের সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ স্থাপনা লাল চিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করেন। পরে অবৈধ দখলদারকে তাদের নিজ নিজ স্থাপনা ও মালপত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশ ও লাগাতার মাইকিং করা হয়।
পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত ৫ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়।
মত বিনিময় সভায় সংহতি প্রকাশ করা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ খালের অবৈধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করায় জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমকে ধন্যবাদ জানান।
বক্তারা বলেন, নোঙরের ৫ দফা যৌক্তিক। তারা টাউনখালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি দখলবাজদের নাম ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান এবং দখলবাজদের রাজনীতিক ও সামাজিকভাবে বয়কট করার জন্য আহবান জানান।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহি টাউন খালটি পৌর শহরের টানবাজার এলাকায় তিতাস নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে পৌর এলাকার গোর্কণঘাট এলাকায় পুনরায় তিতাস নদীতে মিলিত হয়েছে। আগে এই খালটি দিয়ে নৌকা চলাচল করলেও দখলদাররা খালের পাড় দখল করে স্থাপনা নির্মান করায় খালটি সংকুচিত হয়ে গেছে এবং রাতের আঁধারে শহরের বিভিন্ন এলাকার ময়লা আবর্জনা ফেলায় খালটি বর্তমানে নৌ-চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।
শেয়ার করুন