খবর সারাদিন রিপোর্ট ; নওগাঁ জেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া শিশু ইউসুফ আলী-(১১) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন সাংবাদিক ও কলেজ ছাত্রের সহযোগীতায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় পুলিশ উদ্ধার হওয়া ইউসুফ আলীকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
উদ্ধার হওয়া ইউসুফ আলী নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার চুন্ডিপুর ইউনিয়নের সান্তাহার শিমুলিয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রমকালে শিশু ইউসুফ আলী ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে স্টেশনে পড়ে। লাফ দিয়ে পড়ার কারনে সে সামান্য আহত হয়।
পরে আহতবস্থায় ইউসুফ আলী রেলওয়ে স্টেশনে উদ্দেশ্যবিহীনভাবে ঘুরাফেরা করার সময় স্থানীয় কয়েকজন বখাটে তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা শুরু করে।
বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয় দুটি বেসরকারি কলেজের ছাত্র মনন ও রানা শিশুটির কাছে এগিয়ে যান। তারা আহত ইউসুফকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির চিকিৎসার জন্য কাটা টিকেটে পুলিশ কেইস লিখে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দুই ছাত্রকে পরামর্শ দেন।
হাসপাতাল থেকে তাদেরকে বলা হয়, থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ তাদের ব্যবস্থাপনায় শিশুটির চিকিৎসা করাবে। পরে কলেজ ছাত্র মনন ও রানা শিশুটিকে হোটেলে নিয়ে খাবার খাইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
সেখানে নেয়ার পর সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন ও মাইনুদ্দিন রুবেল শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন তার বাড়ি নওগাঁ জেলায়। পরে তারা শিশুর ছবিটি ফেসবুকে পোষ্টসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টার পর শিশুটির পরিবারের খোঁজ পান। রাত ১২টার দিকে তারা শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের কাছে হস্তান্তর করেন। রাত দেড়টার দিকে শিশুর বড় ভাই রিমন মন্ডল পুলিশ ফাঁড়িতে এসে হারিয়ে যাওয়া ইউসুফ আলীকে বাড়িতে নিয়ে যান।
শিশুর বড় ভাই রিমন মন্ডল বলেন, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার একটি মেটাল ফ্যাক্টরীতে কাজ করেন। তার ছোট ভাই ইউসুফ আলী গত ১৪ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে তার বড় বোনের বাড়ি নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পর বড় বোন তাকে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকসায় তুলে দিলে ইউসুফ আলী বাড়িতে না গিয়ে সান্তাহার রেলস্টেশনে চলে যায়। ইউসুফ জানে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাকরী করি।
পরে ইউসুফ সন্তাহার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকায় চলে যায়। পরে সে অন্য একটি ট্রেন দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে আসে। তিনি তার ভাইকে উদ্ধার করে তার কাছে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ, সাংবাদিক ও কলেজ ছাত্রদেরকে ধন্যবাদ জানান।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সালাউদ্দিন খান নোমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ও কলেজ ছাত্র শিশু ইউসুফকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে সবাই মিলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সে আমাদের কাছে তার বাড়ির ঠিকানা বলে। পরে নওগাঁ পুলিশের সহযোগীতায় ইউসুফের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি। রাত দেড়টার দিকে শিশুর বড় ভাই রিমন মন্ডল ফাঁড়িতে আসলে তাকে তার হাতে তুলে দেই।