খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে রেশমা আক্তার-(২২) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ রোববার ভোর রাতে উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের সোনারগাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ রেশমা আক্তার ওই গ্রামের খায়রুল ইসলামের স্ত্রী। রোববার বেলা ১১টায় পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
এদিকে ঘটনার পর পরই স্বামী খায়রুল ইসলামসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে রেশমার মামা আনোয়ার হোসেন ও ফুফা আবদুল আলিম অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দুই বছর আগে কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের চৌবেপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আলমগীর মিয়ার একমাত্র মেয়ে রেশমা আক্তারের সাথে পারিবারিকভাবে খায়রুল ইসলামের বিয়ে হয়। খায়রুল গাজীপুরের একটি প্লাস্টিক ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। পরিবারিকভাবে রেশমার বিয়ে হলেও খায়রুল রেশমাকে মেনে নিতে পারেনি। খায়রুল রেশমাকে এড়িয়ে চলতো। খায়রুল অধিকাংশ সময় গাজীপুরে থাকতো। বাড়িতে এলে খায়রুল রেশমার সাথে খারাপ আচরণ করতো।
এক পর্যায়ে খায়রুলের পরিবার রেশমাকে গাজীপুর পাঠিয়ে দিলেও খায়রুল রেশমাকে পাত্তা দিতো না। মাঝে মাঝে রেশমা বাসায় একা থাকতো। খায়রুল বাসায় ফিরতোনা।
এসব বিষয় নিয়ে মেহারী ও খাড়েরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে একাধিক শালিশ সভা করে দু’জনকে মিলিয়ে দেয়া হয়।
পরে রেশমা গাজীপুর থেকে খায়রুলের গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। গত বৃহস্পতিবার খায়রুল ছুটিতে বাড়িতে আসে। বাড়িতে এসেই সে রেশমাকে মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
এর জেরে রোববার ভোর রাতে ঘরে থাকা কেড়ি ট্যাবলেট (বিষ টোপ) খেয়ে অসুস্থ হয়ে যায় রেশমা। এলাকার কয়েকজন যুবক রেশমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। রেশমা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে খায়রুল সহ তার বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মেহারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মুর্শেদ সাংবাদিদের বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি সংসারটি টিকিয়ে রাখার জন্য। খায়রুল প্রথমে মেনে নিলেও পরে আবার রেশমাকে অবহেলা শুরু করে।
এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা রেশমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করি। এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি।