মোজাম্মেল চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিল্পী আক্তার-(২৯) নামে এক অসহায় স্ত্রী। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।
শিল্পী আক্তার রাজধানী ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা মোঃ মোস্তফা রহমানের মেয়ে। গত ২০২০ সালের ১ আগষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌর এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে মোঃ আবদুল সাত্তারের সাথে শিল্পীর বিয়ে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিল্পী আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকে বাবার বাড়িতে থাকলেও আমাদের দু’জনের সংসার ভালোভাবেই চলছিল। কিছুদিনের মধ্যেই আবদুল সাত্তার তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যাবে বলে অঙ্গীকার করলেও এখন পর্যন্ত তাকে নিজ বাড়িতে তুলে নেয়নি। কিছুদিন ভরণপোষন দিলেও এক পর্যায়ে স্বামী আবদুল সাত্তার তা বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় স্বামী সাত্তার। টাকা দিতে না চাইলে তার উপর অমানবিক নির্যাতন করা হত। তার নির্যাতনের কারণে কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয় তাকে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের দারস্থ হয়েও কোন প্রতিকার পাননি। স্বামীর ছোট ভাই জেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত সদস্য নাসির উদ্দিনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দারস্থ হয়ে কোনো বিচার পায়নি। নাসির উদ্দিন উল্টো ধমক দিয়ে তার ফোনের সংযোগ কেটে দেন। স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কেউ তাকে স্বামীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারছে না।
শিল্পী আক্তার বলেন, ভরণপোষণ ও স্ত্রীর অধিকার চাইলে উল্টো স্বামী তাকে খুন জখমসহ যে কোনো সময় তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ঘটনায় গত ৪ নভেম্বর তিনি নবীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে একটি মামলাও করেছেন, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিল্পী আক্তার বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তার স্বামী আগে আরো তিনটি বিয়ে করেছেন।
নবীনগর উপজেলার বগডহর গ্রামের আসমা বেগম নামের একজনকে প্রথম বিয়ে করেন। বিয়ের আড়াইদিনের মধ্যেই স্বর্ণের বালা চুরির অভিযোগে প্রথম স্ত্রীর সাথে তার বিয়ে ভেঙ্গে যায়। এরপর পারভীন নামে একজনকে বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীর ঘরে তার ৩ সন্তান রয়েছে। কিন্তু তাকে (শিল্পী) স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত রখেছে। স্বামী ভরণপোষন না দেয়ায় তিনি এখন অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। তিনি স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
শিল্পী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের সময় তিনি ঢাকায় মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু স্বামী আবদুল সাত্তার চাপ দিয়ে তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেন।
এ ব্যাপারে আবদুল সাত্তারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি শিল্পী আক্তারকে তার স্ত্রী স্বীকার করে বলেন, আগামী রোববার নবীনগরের কৃষ্ণনগরে বিষয়টি নিয়ে সালিশ হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তার সঙ্গে থাকব নাকি তাকে তালাক দিব। সে যদি সাংবাদিক সম্মেলন করে কিছু করতে পারে করুক। আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি তাকে কোনো নির্যাতন করিনি। গত বুধবারও তার সাথে আমার কথা হয়েছে।