খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নদীর তীর থেকে মাটি কাটা ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পৃথক সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।
গত সোমবার জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের গোয়ালনগর গ্রামে ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নাসিরনগরে ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্র, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের মেঘনা-বলভদ্র নদীর তীর থেকে মাটি কাটা নিয়ে সোমবার দুপুরে গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মাসুক মিয়ার সাথে একই এলাকার রফিক মিয়ার প্রথমে কথাকাটাকাটি হয়।
পরে এনিয়ে উভয়ের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষে লিপ্ত হয়। পরে থেমে থেমে প্রায় ৩ ঘন্টা সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে উপজেলার চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বিকেল ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪জনকে আটক করে।
তিন ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়। আহতদের নাম ঠিকানা জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। চারজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপর দিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সোমবার বিকেল ৫টায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের লোকরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে রব্বান মিয়ার লোকদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ২জন টেটাবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
আহতদের মধ্যে সোহেল রানা-(৩৮), রফিক মিয়া- (৩৫), আশরাফ মিয়া-(২৫) সালমান আহমেদ- (৪০), হেলেনা বেগম-(৪২), ইমরান আহমেদ- (১৮), রাসেল মিয়া-(৩৭), সাইফুল ইসলাম (৪৫). নিপু মিয়া-(৪২) ও সানি মিয়া-(১৩) কে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। আহত রাসেল মিয়াকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ও বাকীরা নরসিংদী জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি ও চিকিৎসা নেয়।
এ ব্যাপারে দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান উজ্জ্বলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই সংঘর্ষ হয়েছে। বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। সংঘর্ষে দুইজন টেটাবিদ্ধ হয়ে আহত সহ ১৫/১৬ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।
অপরদিকে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।