খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক্টর চাপা সিয়াম (৯) নামের এক শিশুর লাশ মর্গে রেখেই হাসপাতালে বসে মিমাংসা করার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরের সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের শামপুর এই ঘটনা ঘটে। নিহত সিয়াম ওই এলাকার রজব আলীর ছেলে।
সন্ধ্যার পর সিয়ামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে ২৫০শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা অবস্থায় হাসপাতালের ভেতরের ক্যান্টিনে বসেই ঘটনাটি রফাদফা করে মিমাংসা করতে বৈঠক করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূইয়া, সুহিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূইয়া, মজলিশপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, মজলিশপুরের যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন সহ স্থানীয় সর্দাররা।
বৈঠকে নিহত সিয়ামের পরিবারকে ৭০ হাজার টাকা দিতে নির্ধারণ করা হয়। এতে আপত্তি করে সিয়ামের পরিবারের পক্ষে থাকা সর্দারগন। তারা এক লাখ টাকা দেওয়ার দাবি জানান। এসময় সুহিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূইয়া আরও ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার টাকা দিতে প্রস্তাব করে। পরে সদর থানায় সমঝোতার বিষয়টি জানিয়ে মামলা যেন না হয়,এর দায়িত্ব দুই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে জানতে মজলিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মিমাংসার জন্য বসে ছিলাম। কিন্তু এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। তিনি এই বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূইয়ার সাথে কথা বলতে বলেন।’
সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূইয়ার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেন। তার কাছে ট্রাক্টর চাপা নিহতের ঘটনা মিমাংসার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
যুবলীগ নেতা বিলাল হোসেন বলেন, বৈঠকে ৭০ হাজার টাকা রায় হয়েছিল। নিহতের পরিবার এই টাকা নিতে চাচ্ছেন না। ট্রাক্টরের চালকের বাড়ি সুহিলপুর ইউনিয়নের মীরহাটিতে। তাই বৈঠকে সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। আর থানা থেকে ওসি সাহেব জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া এই মরদেহ দিবেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরামুল ইসলাম জানান, একটি ছেলে ট্রাক্টর চাপায় মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এই বিষয়ে তার পরিবার বা অন্য কেউ কিছু জানাননি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টি মিমাংসার বিষয়ে আমি অবগত নই। মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
শেয়ার করুন