- খবর সারাদিন রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকরাম আহমেদ-(২৮) খুন হয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে পৌর এলাকার মুন্সেফপাড়ায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রিদোয়ান আনসারী রিমোর বাড়িতে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘাতক রায়হান-(২৮) কে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তার কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিও উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইকরাম আহমেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের মাসুদ মিয়ার ছেলে। ইকরাম তার পরিবারের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ডাঃ ফরিদুল হুদা রোডে অবস্থিত “বি.বাড়িয়া টাওয়ারে” বসবাস করতেন। মাসুদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
ঘাতক ঘাতক রায়হান ঢাকার মগবাজারের জিয়াউল হক জিয়ার ছেলে। তিনি ছাত্রলীগ নেতা রিমোর মামাতো ভাই। রায়হান গত কয়েকদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রিমোদের বাসায় অবস্থান করছিলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা রিমোর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মোটর সাইকেলের চাবি নিয়ে ইকরামের সাথে রায়হানের তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে রায়হান ইকরামকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিদোয়ান আনসারী রিমো জানান, রায়হান তার মামাতো ভাই। তার মামা ভারতে যাওয়ায় রায়হানকে এখানে রেখে যান। মোটর সাইকেলের চাবি নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে ইকরামকে ছুরিকাঘাত করে রায়হান। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। রায়হান মাদকসেবি বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে ঘটনার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জেলা সদর হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে তারা খুনীদের বিচার দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মঞ্জুরে মাওলা ফারাবী জানান, ইকরাম জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। অন্যথায় আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন শোভন ইকরাম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন জানান, মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে তর্কের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তাৎক্ষণিকভাবে ঘাতক রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা রক্তমাখা ছুরিসহ ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছি। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকবেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। তিনি যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
শেয়ার করুন