খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাবির সাথে পরকীয়ার জেরে শাহীনুর বেগম-(২৩) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ফাঁটাপুকুর পাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই নিহত শাহীনুর বেগমের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।
নিহত গৃহবধূ শাহীনুর বেগম সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ফাঁটাপুকুরপাড় এলাকার প্রবাসী ফারুক মিয়ার স্ত্রী ও সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল পশ্চিমপাড়ার তাজুল ইসলামের কন্যা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে নিহত শাহীনুর বেগমের পিতা তাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বিগত আট বছর আগে সুলতানপুর ইউনিয়নের ফাটাপুকুরপাড় তালুকদার বাড়ির শাহজাহান মিয়ার ছেলে দুবাই প্রবাসী ফারুক মিয়ার সাথে তার কন্যা শাহীনুরের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরই ফারুক মিয়া আবার দুবাই চলে যায়।
প্রতি দুই বছর পর পরই ফারুক মিয়া ছুটি নিয়ে দেশে আসতো। ইতিমধ্যেই তাদের সংসারে ফারিয়া আক্তার-(৬) ও জয়মনি-(৪) নামে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
তাজুল ইসলাম জানান, গত আড়াই বছর আগে ফারুক মিয়ার মেজো ভাই মারা যায়। মেজো ভাইয়ের কোন সন্তান নেই। পরে মেজো ভাবীর সাথে ফারুকের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই মধ্যে মেজো ভাবীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরকীয়া চলতে থাকে।
তিনি বলেন, গত ২ নভেম্বর ফারুক মিয়া দুবাই থেকে দেশে চলে আসে। দেশে আসার পরই সে আবার ভাবীর সাথে যোগাযোগ রাখতে থাকে। এনিয়ে শাহীনুরের সাথে ফারুকের সম্পর্কের অবনতি হয়।
গত ৪ ডিসেম্বর ফারুক মিয়া তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত শুক্রবার বিকেলে ফারুক মিয়া শাহীনুরকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ফারুকের ভাই আক্তার হোসেন মোবাইল ফোনে তাকে তার বাসায় আসতে বলেন। তাজুল ইসলাম আক্তারের বাসায় আসার পর শুনতে পান তার কন্যা শাহীনুর কেরির বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে তিনি হাসপাতালে এসে তার কন্যার লাশ দেখতে পান। তাজুল ইসলাম বলেন, ফারুক মিয়া তার কন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে তার লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, ওই গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। আমরা তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবেনা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।
শেয়ার করুন