খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০২১ সালের ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বিসিক রাস্তার সামনে সংঘর্ষের সময় জহিরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় তার ভাই বাবুল মিয়া বাদী হয়ে গত বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন।
বাদী জহিরুল ইসলাম সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের হাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। মামলায় ৫৪ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ২০০/৩০০ জনকে আসামী করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্যান্য আসামীরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের সাবেক এমপি মঈন উদ্দিন মঈন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল মিয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এহতেহামুল বারী তানজিল, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী মোঃ সফি উল্লাহ, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী, সরাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শের আলম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য জায়েদুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হাসান সারোয়ার হাসান, জেলা আওয়ামীলীগের উপ-সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, শহর যুবলীগের সভাপতি আল আমীন সওদাগর, সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেন রনি, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সমর ভৌমিক, সরাইল উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু, জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন রানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার কাউন্সিলার মিজানুর রহমান আনসারী, পৌর সভার কাউন্সিলার মোঃ শাকিল মিয়া, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি আজিজুল হক, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি লিমন আল স্বাধীনসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের ৫৪ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ২০০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় বাবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের ডাকা বিক্ষোভ মিছিলে জহিরুল ইসলাম অংশ গ্রহণ করেন। ওই সময় ১ থেকে ৪ নং আসামী নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোরা গুলি, ককটেল ও বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে জহিরুল ঘটনাস্থলে মারা যায়। ওই সময় পুলিশ ও প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শেয়ার করুন