ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১৯৫জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেলে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীর সামনের রাস্তায় (কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক) সংঘর্ষের সময় কাউসার আহম্মেদ হত্যার ঘটনায় তার চাচা আকরাম হোসেন আদনান বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১০০ থেকে ১৫০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃত কাউসার আহম্মেদ জেলার সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলী আহম্মেদের ছেলে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, সাবেক গনপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী স্ত্রী, মাউশির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ ভূইয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক আলম তারা দুলি, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মহসিন মোল্লা, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল আলম, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফাতিমা আফরিন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুরে মাওলা ফারানি, বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার ভূঁইয়া, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসাইন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদান সাগর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাজভী, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফয়জুন নাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর মিনারা বেগম, আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর জীবন মিয়া, যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আল ফয়সাল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিন মিয়া, শহর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ রনি, সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলম, মাছিহাতা ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিন পাভেল, সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ ভ‚ইয়া, বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল, যুবলীগ নেতা বরকত উল্লাহ সাগর, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিমন আল স্বাধীন প্রমুখ।
মামলায় বাদী আকরাম হোসেন আদনান অভিযোগ করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আন্দোলন কর্মসূচির সময় জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলে কাউসার আহম্মেদ অংশগ্রহণ করে। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বিসিক রাস্তার সামনে সামনে গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোড়া গুলি কাউসারের নাভিতে লেগে গুরুত্বর আহত হয়। পরে কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় ২৭ মার্চ রাত সাড়ে ৮ দিকে মারা যায়। ওই সময় পুলিশ ও প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেৎয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।