খবর সারাদিন রিপোর্ট : দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে থাকার কথা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম। তিনি গত বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজনের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি নিয়াজ মোঃ খান বিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম আরো বলেন, প্রথম থেকেই আমি দূর্নীতির বিপক্ষে। অফিসে যে কাজ করে তাকে সততা নিয়েই কাজ করতে হবে। আমি প্রথমে এসেই একজন তহসীলদারকে সাসপেন্ড করেছি। এবিষয়ে আমি কাউকে ছাড় দেবনা। সেকেন্ড হচ্ছে জনভোগান্তি। আমি এডিসিসহ সকল অফিসারকে এই বার্তা দিয়েছি। কাজ করার আশা দিয়ে কাউকে ঘুরানো যাবেনা। যদি না হয়,আইনে কাভার না করে আশা দিয়ে লাভ নেই। আপনি বলে দেন পারবোনা, হচ্ছেনা। কালকে আসেন, পরশু আসেন। এটা করার দরকার নেই। আপনি ৩ দিন,৩ মাস ঘুরালেন, একটা লোক তার কাজ ফেলে সারা দিন বসে থাকলো। এ জিনিসটা আমার অফিসে হবেনা। আমার অফিসের যতো কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে সবাইকে এই ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য অফিসেও এই ম্যাসেজ দিয়ে দেয়া হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম আরো বলেন, আমাদের ত্রুটি থাকলে অবশ্যই লিখবেন। আমার সাথে সখ্যতা আছে বলে লিখবেননা, এটাও অন্যায়। অবশ্যই আপনি আমার কিছু থাকলে লিখবেন। যদি সত্য হয়ে থাকে। আমার জানতে হবে। সতর্ক হতে হবে। অহংকার, দাম্ভিকতা করে কি অবস্থা হয়েছে দেখলেনতো একটা সরকারের। চেয়ারে বসেছি বলে দাম্ভিকতা করতে হবে! লিখলে না লিখলে, এই লোক কেন লিখলো-এই কথা আমার প্রশাসন কখনো বলবেনা। আপনাদের চোখেই সবকিছু দেখতে চাই। তিনি বলেন-আমি অবাক হয়েছি এই জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় নেই তা জেনে। আমার রিপোর্টে এটি অবশ্যই যাবে। ট্রেনের স্টপেজের বিষয়েও লিখবো। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্থিরতার বিষয়ে বলেন-
ক্লাস সিক্স -সেভেন,এইট-নাইটের শিক্ষার্থীরা আসছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ নিয়ে। বরখাস্তের দাবি করছে। তাদের কথা শুনে মনে হয়, এসব তাদের কন্ঠের কথা নয়। ২০০৪,২০১৪ সালের অভিযোগ নিয়ে আসছে এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আবার শিক্ষকদের ডেকে আনলে তারা বলছেন, স্কুল ফেলে বাইরে ঘুরাফেরা করে শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে কি তারা শাসন করতে পারবেননা। আমার কাছে মনে হচ্ছে এসব করে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পায়তারা চলছে। দেশব্যাপী একটা অস্থিরতা তৈরী করার জন্যে যেভাবে করার সেভাবে করছে।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগদানের পর মহাসড়কের অবস্থা আমি দেখেছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সড়কের কাজে যুক্ত লোকজন ভারতে চলে গেছে। বিষয়টি আমি সংশিষ্ট দপ্তরে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা চারলেন সড়কের বাকি কাজগুলো সরকারি অর্থায়নে করার অনুমোদন দিয়েছেন। তাই অতি দ্রুতই চারলেন সড়কের অসমাপ্ত কাজ শুরু হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জেসমিন সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহমুদা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা।
সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ আরজু, খ.আ.ম রশিদুল ইসলাম, সৈয়দ মিজানুর রেজা, মনজুরুল আলম, দীপক চৌধুরী বাপ্পী, আ.ফ.ম কাউসার এমরান, শেখ সহিদুল ইসলাম, আল আমিন শাহিন, আবদূন নূর,পীযুষ কান্তি আচার্য, ইব্রাহিম খান সাদাত, মফিজুর রহমান লিমন, শিহাব উদ্দিন বিপু, সৈয়দ মোঃ আকরাম, নজরুল ইসলাম শাহজাদা, বিশ্বজিৎ পাল বাবু, শাহাদাৎ হোসেন, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
শেয়ার করুন