খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ফারহান রনিকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন শারমীন বেগম। ফারহানের স্বজনের জায়গাতেই থাকতেন শারমীন ও তার স্বামী সন্তানেরা। পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক ছিল।
এ অবস্থায় শারমীনকে এভাবে পৈশাচাশিকভাবে হত্যার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার। ওই পরিবারে এখন শোকের মাতম। ঘাতক ফারহানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা।
এদিকে এ ঘটনায় শারমীন বেগমের বড় মেয়ে রুমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ফারহানকে আদালতে তোলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফারহান অসংলগ্ন কথা বলছে। সে বলতে চাইছেন শারমীন বেগম তাকে তাবিজ করেছে। তার এক মেয়েকে সে বিয়ে করতে চেয়েছিলো। এসব কারণে সে এটা করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ফারহান মাদকাসক্ত। একই সঙ্গে সে চুরি, ছিনতাইয়ে জড়িত। পরিবারও তার জ্বালায় অতিষ্ঠ। গত কয়দিন ধরে ফারহানের পিতা যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ভূইয়া বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীর বাজারে ঘটে যাওয়া শারমীন বেগম ওরফে হরলুজা বেগম (৫০) হত্যাকাণ্ড যেন সব পৈশাচাশিকতাকে হার মানিয়েছে। মঙ্গলবার পুলিশ সেখানকার একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে ৫০ বছর বয়সি নারীর পুড়া মরদেহ (কয়লা) উদ্ধার করে। ওই নারীর দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা মাথা উদ্ধার করা হয় পাশের একটি পুকুরের কাছের জমি থেকে। মাথাটিও গর্তে পুঁতে রাখা হয়। ঘাতকের দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারী উপজেলার হীরাপুর গ্রামের কলোনি এলাকার মো. নুরুল ইসলাম বেপারীর স্ত্রী হরলুজা বেগম (৫০)। ভোরে ওই নারীকে ডেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় ঘাতক ওই যুবক।
শারমীনের বড় মেয়ে রুমার দাবি, চুরি করা হাঁস রান্নার জন্য তার মাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। মা হয়তো এতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ কারণে সে হত্যা করে।
আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘাতক ফারহান এ নিয়ে একেক সময় একেক কথা বলছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার শীতের সকালে জ্বলতে থাকা আগুনের কাছাকাছি ঘুরঘুর করছে এক যুবক। জানালো, খরকুটো পুড়াচ্ছে। তবে চুরি করে আনা হাঁসের পালকসহ অংশ বিশেষ পুড়াচ্ছিলো বলে সন্দেহ স্থানীয়দের। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হলে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয় ওই যুবক। একই সঙ্গে মারতে তেড়ে আসে। দলবদ্ধ হয়ে ওই যুবককে আটক করা হয়। তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। এরই মধ্যে দেখা যায় পুড়ছে মানবদেহ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক হত্যার কাহিনি। উদ্ধার করা হয় দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা মাথা।