খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে চাঞ্চল্যকর ফল ব্যবসায়ী মোঃ সাইদুর রহমান হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১ম আদালত) আয়েশা আক্তার সুমি এই আদেশ প্রদান করেন। এছাড়াও আসামীদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চর-শিবপুর গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে কাজল মিয়া-(৪৯), একই উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে রিপন মিয়া (৩২) ও নজরুল ইসলামের ছেলে রাসেল মিয়া- (৩০)।
রায় ঘোষনার সময় রিপন মিয়া ও কাজল মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাসেল মিয়া পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরন ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকার মেঘনা নদী থেকে ফল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর একদিন আগে তিনি নিখোঁজ হন। সাইদুর রহমান উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। তিনি উপজেলার করইকান্দি ফেরিঘাট এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি লোকমান মিয়া বাদি হয়ে একই বছরের ১ অক্টোবর রাসেল মিয়াকে আসামী করে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই আসামী রিপন মিয়া ও মোঃ কাজল মিয়ার সম্পৃক্ততা পেয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন।
পরে বাঞ্ছারামপুর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী অফিসার মোঃ সালাউদ্দিন চৌধুরী মামলাটি তদন্ত করে আসামী মোঃ রাসেল মিয়া, রিপন মিয়া ও মোঃ কাজল মিয়াসহ তিন আসামীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেন।
পরে গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামী রাসেল মিয়া ও কাজল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আসামীরা আদালতকে জানায়, পাওনা ২০ হাজার টাকা না পেয়ে ক্ষুব্দ হয়ে সাইদুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন তারা। পরে আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে মামলাটি সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় আসামী মোঃ রাসেল মিয়া, রিপন মিয়া ও মোঃ কাজল মিয়াকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। এসময় প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড ও প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজাদ মিয়া বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তারা বলেন, ভবিষ্যতে সমাজে এ ধরনের খুন খারাপি বন্ধে এই রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সমাজ থেকে অপরাধ প্রবনতা কমে আসবে।
অন্য দিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যডভোকেট মোশারফ হোসেন সামি বলেন, এই রায়ে আমরা সংক্ষুব্দ। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমান হাজির করতে পারেনি বাদি পক্ষ। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
শেয়ার করুন