খবর সারাদিন রিপোর্ট : প্রতিবছর ঈদের নামাজ শেষে প্রিয়জনদের সাথে কোলাকুলির এই দৃশ্য দেখা গেলেও করোনা ভাইরাসের কারণে এবার তা হচ্ছে না। এক মাস রোজা রাখার পর খুশির ঈদ এলেও মহামারি করোনার কারণে তা নিরানন্দ হয়ে গেছে। ঈদের খুশির বদলে আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা নিয়ে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
খিলগাঁও গোরান এলাকার রোদওয়ান আহমদ তানিম বলেন, ঈদের দিন এমন হবে কোনোদিন ভাবিনি। রোজার শেষে ঈদ এসেছে, কিন্তু ঈদের সেই আমেজ কোথাও নেই। ঈদের নামাজ পড়েছি আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা নিয়ে। মহামারি করোনা ভাইরাস আমাদের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। কবে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাব তার কোনো ঠিক নেই।
ষাটোর্ধ্ব মমিনুল ইসলাম বলেন, বয়স আমার কম হয়নি। যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ সবই দেখেছি। কিন্তু এমন দৃশ্য কখনো দেখিনি। কোনো যুদ্ধ নেই, হানাহানি নেই তারপরও মানুষের মনে কোনো আনন্দ নেই। এক কঠিন মুহূর্ত। প্রতিবছরই ঈদের দিন প্রতিবেশীদের সঙ্গে আনন্দ করেছি। বন্ধু, বড় ভাই, পরিচিতজনদের ঈদের নামাজ শেষে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেছে। এবার কারো সঙ্গে কোলাকুলি করার কোনো সুযোগ হয়নি। দূরে দাঁড়িয়ে একজন আরেকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। কোলাকুলি করতে না পারার বেদনায় বুক ফেটে যাওয়ার মতো অবস্থা। কিন্তু কিছু করার নেই। এ পরিস্থিতি আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে।
মুগদা এলাকার সামিউল জানান, জীবনে এই প্রথম পরিবার ছেড়ে ঈদ করলাম। ঈদের নামাজ পড়েছি মসজিদে। সবার মনে আনন্দের তেমন কোন ছাপ নেই। সবার মাঝে এক ধরণের আতঙ্ক বিরাজ করছে। আশা করি সামনের ঈদ ভালো করতে পারবো।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সোমবার (২৫ মে) সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ।
জামাত শেষে খুতবা পেশ করা হয়। এর পর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। মোনাজাতে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করা হয়েছে। পাশাপাশি সম্প্রতি বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও নিহতদের জন্য দোয়া করা হয়েছে। এছাড়া মোনাতে সব উম্মতে মোহাম্মদির গুনাহ মাফ চাওয়া হয়েছে। সব মৃত ব্যক্তির কবরের আজাব মাফ চাওয়া হয়েছে। যেকোনও বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য প্রার্থনা করা হয়।