খবর সারাদিন রিপোর্ট : পাওনা টাকা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে প্রায় চারলাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে দোকানের মালিক।
এর নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও তার পরিবার। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগীদের মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানোর অভিযোগ করেছেন তারা। গ্রামের প্রভাবশালী হওয়ায় ওই পরিবারগুলো চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত আট মাস আগে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর সেঁজামুড়ার ইউপি সদস্য বাছিরের ভাতিজা রাশেদ একই এলাকার মিন্টুর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নেন। প্রায় তিন মাস আগে এই টাকা রাশেদের কাছে ফেরত চান মিন্টু। এনিয়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়, তখন মিন্টু ভাই নুরু ঝগড়া করতে বাঁধা দেন। এরপর রাশেদ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তার চাচা বাছির মেম্বারের নেতৃত্বে পাওান টাকা নিতে মিন্টুর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
এ ঘটনা পরে শালিসি করে মিমাংসা করা হয়। মিমাংসা করা হলেও মিন্টুর বাড়ির লোকজনকে রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্ত করতো ইউপি সদস্য বাছির ও তার বাতিজা রাশেদের লোকজন। এরই জেরে ঈদের দুইদিন আগে ইউপি সদস্য বাছির দেশি অস্ত্র জমায়েত করে মিন্টুর বাড়িতে হামলা করার জন্য। খবর পেয়ে পুলিশ বাছির মেম্বারের বাড়ি থেকে দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর একদিন পর পুলিশ মিন্টুর ভাই মুদিমালের দোকানদার নূরুকে আটক করে নিয়ে যায়। দোকানদার নুরু জেলে থাকা অবস্থায় ঈদুল ফিতরের রাতে তার দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তার দোকান। নূরু ও মিন্টুর পরিবারের সদস্যদের দাবি, দোকানে গ্যাস সিলিন্ডারসহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
মিন্টু ও নুরুর মা দাবি করে বলেন, দোকানে অগ্নিসংযোগ করেছে বাছির মেম্বারের বাড়ির লোকজন। আমরা আতংকে আছি। ঘর থেকে বের হলেই তাদের হামলার শংকায় থাকি।
তাসলিমা বেগম নামের এক নারী বলেন, মিন্টুরা হচ্ছে আমার মামার বাড়ির। আমার ছেলের নাম নূরুল ইসলাম। সে নাকি মিন্টুদের পক্ষ নিয়েছে, তাই স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির আহম্মদ নামে এক দারোগা টাকা খেয়ে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে মামলায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। সেই দারোগাকে কারণ জিজ্ঞেস করলে, তিনি আমাকে মারতে তেড়ে আসেন।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ইউপি সদস্য বাছিরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
আউলিয়া বাজার ফাঁড়ির এএসআই আহমদ বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানেন।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একপক্ষ মামলা দেওয়ায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। এসময় একপক্ষের চারজন ও অপর পক্ষের দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।