মোজাম্মেল চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : প্রেমে প্রতারিত হয়ে অভিমানে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার দুই কিশোরী। এমন ধারনায় প্রেমিক হিসেবে নাম আসা রুবেলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে ফাসঁ লাগিয়ে দুই কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটিত হয়নি এখনো। ওদিকে পরিবারের দাবী হত্যা করা হয়েছে দুই কিশোরীকে ।
১৭ই জুন বিকেলে কসবার কুটি পোষ্ট অফিসের পেছনের সিড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সোনিয়া (১৩) ও সুমাইয়ার (১৪) মরদেহ। দরিদ্র পরিবারের ঘনিষ্ট এই দুই বান্ধবীর একই সাথে এমন মৃত্যুর ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তারা কি আত্বহত্যা করেছে,আত্বহত্যা করলে কেন,নাকি তাদেরকে কেউ হত্যা করেছে, এমন নানা প্রশ্ন দেখা দেয় স্থানীয় জনমনে। আলোচনা রয়েছে ঘনিষ্ট এই দুই বান্ধবীর প্রেমিক ছিলো একজনই। কিন্তু দুই বান্ধবী জানতোনা সেটি। যখন জানতে পারে তখনই প্রেমিকের ওপর ক্ষোভ-অভিমানে আত্বহত্যা করে। ওইদিন দুপুর ২ টার দিকে সোনিয়া ও সুমায়া ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষন পরই স্থানীয় পোষ্ট অফিসের ছাদে উঠার সিড়িতে তাদের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে খবর পান পরিবারের লোকজন। ওই সিড়ির সপ্তম ধাপে একজনের এবং নবম ধাপে আরেকজনের নিথর দেহ ঝুলছিলো। তাদের নিজনিজ ওড়নায় ফাঁস লাগানো হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছিলো তারা আত্বহত্যা করেছে বলেই মনে হচ্ছে তাদের কাছে। তবে নিহত সোনিয়ার বাবা বাবুল মিয়া ও মা নার্গিস বেগম জানান- সোনিয়া ও সুমাইয়া ফাঁসি দিয়েছে এমন কোন আলামত বুঝা যায়নি। যেকোন লোকই হোক তাদেরকে মেরেছে। নিহত সুমাইয়ার মা মিনু বেগম বলেন-কিছুদিন আগে সবাই বলছে আমার মেয়ে পুলাপানের সাথে কথা বলেছে। আমি সাথে সাথে তার কাছ থেকে ফোন রেখে দেই। আমার মেয়ে খারাপ ছিলোনা। তবে এলাকার অনেকে জানিয়েছেন প্রেমের সম্পর্কের জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। প্রেমিকের সাথে অনেক দেনদরবারের স্বাক্ষী তারা। বিভিন্ন সময় দুই কিশোরী ও তাদের প্রেমিকের পরিবারকে সামলানোর হোশিয়ারও করেছিলেন আশপাশের মানুষ। সোনিয়ার পিতা বাবুল রিকসা চালক এবং সুমায়ার পিতা কুমিল্লায় শ্রমিকের কাজ করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সায়েদুর রহমান স্বপন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন। কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানান- তারা একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
শেয়ার করুন