খবর সারাদিন রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিপক্ষকে মামলায় ফাঁসাতে বৃদ্ধের মাদকাসক্ত ছেলে রুবেল মিয়া নিজেই তার বাবা মতি ভূইয়াকে(৬০) পিটিয়ে হত্যা করেছেন। ঘটনার পর থেকে ওই পক্ষের লোকজন বাড়ি ছাড়া। এই সুযোগে আসামি পক্ষের লোকজনদের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ মতি ভূইয়ার মৃত্যু হয়। তার পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশি জামির হোসেন ও রহিম মিয়ার সাথে পূর্ববিরোধের জেরে তারা মতিকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে মতির মাদকাসক্ত ছেলে রুবেলই তাকে মেরেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ করছেন জামির ও রহিম।
বৃদ্ধ মতি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার ছেলে মো. রাকিব বাদী হয়ে জামির ও রহিমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আসামি পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে যান। এ সুযোগে রহিমের বাড়ির ২টি ঘর এবং জামিরের একটি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হয়। রুবেলের নেতৃত্বে তার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানিয়ে রহিমের স্ত্রী লিপি আক্তার ও জামির মিয়া জানান,তাদের ঘর থেকে সবকিছু লুট করে নেয়া হয়েছে। ফ্রিজ,টিভি,ঘরের আসবাবপত্র,এমনকি দলিলপত্র,জাতীয়পরিচয়পত্র পর্যন্ত তারা লুট করে নিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে ২০/২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। আরো জানান,রুবেলের মাদক সেবন ও কারবারে বাধা দেওয়ার কারণে প্রায়ই সে তার বাবাকে খুন করে রহিম ও জামিরকে ফাঁসানোর হুমকি দিতেন। এ নিয়ে মতি ভূইয়ার মৃত্যুর কয়েকদিন আগে জামির বিজয়নগর থানায় অভিযোগও দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিহত মতি ভূইয়ার কয়েকজন প্রতিবেশি জানান, রুবেল দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। এ নিয়ে তার বাবার সাথে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ইতোপূর্বে রুবেল তার বাবার গায়েও হাত তুলেছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে রুবেলই মাদকসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাকবিত-ার জেরে তার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
তবে রুবেল মিয়া বলেন, বাড়ির জায়গা নিয়ে রহিম ও জামিরের সাথে আমাদের বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরেই ওইদিন হঠাৎ করে রহিমের ছেলে রিফাতসহ ১২/১৪ জন এসে আমার বাবাকে পিটিয়ে মারে। আসামি পক্ষের ঘর-বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ মিথ্যা।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, বাড়ির সীমানা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা চলছে। এর জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড- ঘটেছে কিনা সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
শেয়ার করুন