স্টাফ রিপোর্টার : যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থী নুসরাত জাহানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মর্মাহত ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এর পেছনে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
রবিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এ কথা বলেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করতে যান তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নুসরাতের বিষয়ে খোঁজ নেন। তার চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে নুসরাত জাহানের চিকিৎসায় নয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। বোর্ডে রয়েছেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, অধ্যাপক আবুল কালাম, অধ্যাপক রাইহানা আউয়াল, অধ্যাপক লুৎফর কাদের, অধ্যাপক মহিউদ্দিন, অধ্যাপক বিধান সরকার, অধ্যাপক নওয়াজেশ খান, চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম ও জহিরুল ইসলাম।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, নুসরাতের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার পর একজন পরীক্ষার্থী নুসরাতকে বলে, তার এক বান্ধবীকে ছাদে নিয়ে মারধর করা হচ্ছে। এটা শুনে সে দ্রুত ছাদে যায়। এরপরই এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নুসরাত জাহান আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় যায়। পরে সে প্রকৃতির ডাকে বাথরুমে যায়। সেখানে থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার অনুগত কয়েক দুর্বৃত্ত তাকে ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার আত্মচিৎকারে শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে।
সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ইতিপূর্বে ওই ছাত্রীর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় অভিযোগ করেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা সবসময় তার মেয়ে নুসরাত জাহানকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করতেন। এ অভিযোগে গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।