ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদৎ হোসেন হামলার শিকার হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শাহাদৎ হোসেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হামলাকারী রোমান মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাজীপাড়ার রউফ মিয়ার ছেলে ও সৈনিক লীগের আহ্বায়ক জুম্মান মিয়ার ছোট ভাই। তিনি ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রোমান ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালিয়ে বিকেলে শহরের বিরাসার এলাকা থেকে তাঁকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন চালুর দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্টেশন চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করেন সচেতন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য অন্যদের সঙ্গে শাহাদৎ হোসেনও স্টেশন এলাকায় যান। মানববন্ধন শেষের দিকে শাহাদৎ জানতে পারেন, ছাত্রলীগের এক কর্মী এক রেলকর্মচারীকে মারধর করেছেন। শাহাদাৎ বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুবলীগের নেতা হাসান সারোয়ারকে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হন রোমান মিয়া। একপর্যায়ে তিনি শাহাদৎ হোসেনের ওপর হামলা করেন। এতে তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। উপস্থিত সাংবাদিকেরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে জড়ো হন ও ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। সাংবাদিকেরা হামলাকারীর দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সফিউল্লাহ, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক এম এ এইচ মাহবুব আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন প্রেসক্লাবে এসে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিকেলে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম, বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইও-১) ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ সাংবাদিক শাহাদৎ হোসেনকে হাসপাতালে দেখতে যান। পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
শাহাদাৎ হোসেন বলেন, স্টেশনের কর্মচারী মুরাদুল ইসলামকে রোমান মারধর করেছেন জানতে পেরে বিষয়টি যুবলীগের নেতা হাসান সারোয়ারকে জানান। এতে রোমান তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন।