খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকসহ নাজিরের অপসারণ চেয়ে আইনজীবীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল আদালত বর্জন কর্মসূচীর ২য় দিন চলছে। রবিবার সকাল থেকে জেলার কোন আদালতেই যায়নি আইনজীবীরা। আইনজীবী সমিতির কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা তাদের কর্মসূচী পালন করছে। এতে করে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর আগে জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল হকের অপসারনের দাবীতে বৃহস্পতি, রবি ও সোমবার পর্যন্ত ৩ দিনের জন্য সকল কোর্ট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি।
এদিকে আদালত বর্জনকে ঘিরে সকাল থেকে জেলা জজ আদালত, চীফ জুডিশিয়াল আদালতসহ সবকটি আদালতের বিচারিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিচারপ্রাথীরা দূর দূরান্ত থেকে আসলেও আইনজীবীদের কোর্ট বর্জন ও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকায় বিচার প্রার্থীরা ফিরে যাচ্ছে। এতে তারা চরম দুর্ভোগের শিকার।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডঃ তানভীর ভুইয়া জানান, আমাদের কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করি বিষয়গুলোর সুরাহা হবে। কর্মসূচীর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা না হলে আমাদের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। যতদিন পর্যন্ত দাবী আদায় না হবে আমাদের আন্দোলন বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কৌশলে চলমান থাকবে। এছাড়াও উচ্চ আদালতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩ আইনজীবীকে তলবের বিষয়ে তিনি জানান, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১৭ তারিখ উপস্থিত থেকে মাননীয় বিচারপতির কাছে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করব।
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আদালতে এসে রীতিমত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আইনজীবীরা আদালতে না আসায় বিচার প্রার্থী জনগন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তারা দুর্ভোগ পোহানোর পাশাপাশি ন্যায় বিচার পাচ্ছেনা।
উল্লেখ্য, গেল ১ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বিতন্ডা হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে বিচারক মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি।
এছাড়াও তারা জাল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে জাড়িত আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণে জেলা জজের কাছে দাবী জানান। আইনজীবীদের অভিযোগ জেলা জজ ওই নাজিরকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন এবং জেলা জজের ইন্ধনেই বিচার বিভাগীয় কর্মচারি অ্যাসোসিয়েশন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কর্মবিরতি ও মানববন্ধ কর্মসূচী পালন করে। সেজন্য তারা জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবী জানান।