খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৯৩ জনের নামউল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০০ থেকে ২০০জনকে আসামী করা হয়। গত বুধবার শহরতলীর বিরাসার গ্রামের মোঃ সোলেমান বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফরহাদ রায়হান ভূইয়ার আদালতে এই মামলাটি দায়ের করলেও গত রোববার আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন বিরাসার গ্রামের বড় গোষ্ঠির বাসিন্দা ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া, একই গ্রামের কাসেম মাস্টার, নাটাই ইউনিয়নের সদস্য সাদ্দাম মিয়া, ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়ের ও বিপ্লব, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুর মাওলানা ওরফে ফারানি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাসুম বিল্লাহ, শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন লিটন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মিকাইল হোসেন ওরফে হিমেল, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মহসিন মোল্লা। বাকিরা শহরতলীর বিরাসার ও খৈয়াসার এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আহত সোলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। স্বৈরাচার ‘শেখ হাসিনা’ পতনের ১ দফা দাবির আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ও কর্মসূচী অনুযায়ী বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টা থেকে ১২টার দিকে শহরতলীর বিরাসার এলাকয় শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে জড়ো হন।
খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসীরা ককটেল, বোমা, পিস্তল ও দা নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা কালো একটি ব্যাগ থেকে ছাত্র জনতাকে উদ্দেশ্য করে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ করে। বোমার আঘাতে ছাত্র জনতা ও জনসাধারণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে ছত্র ভঙ্গ করার চেষ্টা করে তারা। এক পর্যায়ে তারা কোমর থেকে পিস্তল বের করে ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে এলোপাথাড়ি গুলি করে। ছাত্রলীগ কর্মী সাদ্দাম পিস্তল দিয়ে গুলি করলে বাম বগলের নিচে লাগলে সোলমান আহত হন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পেট্রোল দিয়ে ২০টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। তারা ত্রাসের রাজত্ব করে বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। স্থানীয়রা সোলমানসহ অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার সোলমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে তিনি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ঝর্ণা মুনমুন বলেন, রোববার দুপুরে আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শেয়ার করুন