খবর সারাদিন রিপোর্টঃ শনিবার দুপুরে ভারতের আগরতলা থেকে ২৬ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে নিছক একটি সড়ক দুর্ঘটনাকে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরিকল্পিত হামলা বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় বিষয়টির খোলাসা করতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ জাবেদুর রহমান। রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভারত থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসটিতে হামলা নয়, বরং দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। তিনি বলেন, গত শনিবার দুপুরে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার খবরটি ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত হামলা বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিছক একটি ছোট দুর্ঘটনা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মূলত চারলেন সড়কের নির্মাণ কাজের জন্য কুমিল্লা- সিলেট স্বাভাবিকভাবেই সরু এবং বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুরে আগরতলা থেকে ঢাকা গামী শ্যামলী পরিবহনের ঢাকা-আগরতলা বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি ট্রাক বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে চাপ দেয়। এ সময় বাসটি বাঁদিকে সরে গিয়ে একটি তিন চাকার ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ভ্যানটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ভ্যান চালক আহত হয়। তবে বাসে থাকা সকল যাত্রীরা অক্ষত ছিলেন। বাসের ১৭ জন ভারতীয় এবং ৯ জন বাংলাদেশী যাত্রী ছিলেন। ঘটনার পর শ্যামলী পরিবহনের বাসচালক আসাদুল হক ও ভ্যান চালক ইব্রাহিম এর মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয়। পরে স্থানীয়রা আহত ভ্যান চালককে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে।
খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্যামলী পরিবহন বাসের কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং ভ্যান কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে মীমাংসা হয় এবং বাসটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ ভ্যান গাড়িটি রেকার দিয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। সেখানে কোন রকম হামলা কিংবা কোন দেশ বা সম্প্রদায়কে কটাক্ষ করে কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে একটি চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে এ অবস্থায় এমন গুজব রটিয়ে দিয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো অত্যন্ত দুঃখজনক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা বাসের চালক মো. আসাদুল হক বলেন, ‘একটি ট্রাক ওভারটেক করতে গেলে আমি ইমার্জেন্সি ব্রেক করে দাঁড়িয়ে যাই। এ সময় পিছনে থাকা একটি তিন চাকার ভ্যান ধাক্কা লাগে। এতে ভ্যানটি বাসের পিছনে আটকে যায়। বিষয়টি হাইওয়ে থানা পুলিশকেও অবহিত করা হলে পুলিশ এসে রেকার দিয়ে ভেনটি সরিয়ে নেয়। দুর্ঘটনায় বাসের কোনো ক্ষতি হয়নি কিংবা যাত্রীরা আঘাতপ্রাপ্ত হননি।’ তিনি আরো বলেন, বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের সাথে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কোন বাক-বিতন্ডা বা কোনরকম ঝামেলা হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাসে হামলার খবর দেখে আমিও অবাক হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।