মহিনুল ইসলাম সুজন নীলফামারী : বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেছেন,আমি অভিভূত হয়েছি বাংলাদেশের মানুষের আয় উন্নতি দেখে।সাতদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে, গ্রামীন চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে ও তাদের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে।
বাসাবাড়ীতে টিউবওয়েল, স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা, টিনের ঘর, ফসলি জমি ও তাদের উন্নত জীবনমান দেখে।তিনি বলেন, যে মানুষটি এক সময় একবেলা খেতে পারতো না, তারা আজ উন্নত জীবন যাপন করছে।ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করিয়ে সুখি সমৃদ্ব জীবন গড়ে তুেলছে।আধুনিক বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে হাস, মুরগী, গাভী, মাছ চাষ, সবজি চাষ ও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়েছে।
নীলফামারী সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের দুহুলী পূর্বপাড়া গ্রামে হতদরিদ্র পরিবার গুলোর বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ঘুরে ঘুরে দেখেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন।তিনি তিন দিনের জন্য রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী সদরে সফরে আসেন।
মঙ্গলবার (২রা এপ্রিল)দুপুরের দিকে ওই ইউনিয়নের (আল্ট্রা পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামের) ব্র্যাকের হতদরিদ্র পূর্নবাসন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের চিত্র তিনি ঘুরে ঘুরে দেখে এসব কথা বলেন।
ব্র্যাকের আল্ট্রা পুওর গ্রাজুয়েশন কর্মসূচির সদস্য ওই গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেমের স্ত্রী ফেন্সি বেগম (৩৫) বলেন, ব্র্যাকের হতদরিদ্র পুর্নবাসন কর্মসূচির সদস্য হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আজকে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ বেড়েছে।তিনি বলেন, ২০১০ সালে জানুয়ারী মাসে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দুইটি বকনা বাছুর ক্রয় করে সেগুলি লালন পালন করে বড় হলে ২০১২ সালে দুইটি বাছুর প্রসব করে।এর থেকে আরও অনেক গরু বিক্রি করে এখন আমরা স্বাবলম্বী হয়েছি।
টিনের ঘর, মোটর সাইকেল ক্রয় করতে পেরেছি।এখন একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা থেকে প্রতিদিন গড় আয় হয় ৬শত থেকে ৮শত টাকা।এ কারনে বাংলাদেশ নিম্ন
আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হয়েছে।
ফেন্সি বেগম বলেন, চার সদস্যের পরিবারে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বড় সুখে আছি।ব্র্যাকের ওই উদ্যোগের ফলে বর্তমানে আমাদের ছেলে-মেয়ে দুজনেই পড়ালেখা করছে।এর মধ্যে ছেলে রাকিব মিয়া ৬ষ্ট শ্রেনীতে আর মেয়ে শ্যামলী আকতার কলেজে পড়ছে।
ব্রিটিশ হাই কমিশনার এসময়ে আরো বলেন, আমরা চাইব ব্রিটিশ কোম্পানী গুলো আরো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিক।তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা অনেক ভাল।
বাংলাদেশ আরো উন্নতির দিকে এগিয়ে যাক এ কামনাই করি।বাংলদেশে ব্যবসা বানিজ্যের যতেষ্ট সুযোগ সুবিধা রয়েছে।ব্যবসায়িক পরিবেশও ভাল।এ ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থাও আগের চেয়ে অনেক উন্নত।বাংলদেশের মানুষের ব্যবসায়িক সক্ষমতা রয়েছে।
ব্রিটিশ কোম্পানী গুলো আরও যাতে বিনিয়োগ বাড়ায়, সে ব্যাপারে দেশে ফিরে গিয়ে ব্রিটিশ কোম্পানী গুলোকে বলব।বাংলাদেশ সর্ম্পকে বাহিরের দেশের কোম্পানী গুলোর যে খারাপ ধারনা আছে, সেটি আসলে ঠিক নয়। আমি হাই কমিশনার হিসেবে আমি বিশ্বাস করিনা।
এসময় ডিকসনের সফর সঙ্গী ছিলেন, জেলা প্রশাসক বেগম নাজিয়া শিরিন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. মুসা, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক রেদওয়ানুল ইসলাম,সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোজিনা হক,জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি লাইলুন নাহার প্রমুখ।