ডেস্ক রিপোর্ট : আজকের দিনটি ছিল বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের! ব্যাটে বলে ফিল্ডিংয়ে বলতে গেলে একাই হারিয়ে দিলেন ক্যারিবিয়ানদের। ব্যাট হাতে বিশ্বকাপের মতো বিশাল আসরে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি, বল হাতে দলের প্রয়োজনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট, নিজের ৬ হাজার রান মাইলফলক অতিক্রম। সবই এলো হেসেখেলে। বাংলাদেশ পেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয়। যোগ্য সঙ্গী হিসেবে লিটন দাসও উপহার দিয়েছেন ৯৪ রানের অপরাজিত নান্দনিক এক ইনিংস। এই দুই ব্যাটসম্যানের সামনে পাত্তাই পাননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীর্ঘদেহী পেসাররা। সাকিব অপরাজিত ১২৪ রানে।
এই জয়ের ফলে ৫ ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলেন টাইগাররা। উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচ নম্বরে। অন্যদিকে সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে ৩ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপই শেষ হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের!
এর আগে আজ সোমবার ইংল্যান্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ড টনটনে টস বল বেছে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। শাই হোপের ৯৬ ও এভিন লুইসের ৭০ রানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৩২১ রানের বড় সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ে সহজ জয় তুলে নিয়েছেন সাকিব-লিটনরা।
জবাবে খেলতে নেমে রানের চাকা সচল রাখায় মনোনিবেশ করেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ৮ ওভারে দলীয় স্কোরে অর্ধশত রানও যোগ করে ফেলেন তারা। দলীয় ৫২ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে ২৩ বল থেকে ২৯ রান সংগ্রহ করেন সৌম্য সরকার। আন্দ্রে রাসেলের বলে স্লিপে ক্রিস গেইলকে ক্যাচ প্যাকটিস করান তিনি। তামিমের সঙ্গে জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান।
তামিম-সাকিবের ৬৯ রানের জুটি দারুণভাবে এগিয়ে নিচ্ছিলো বাংলাদেশকে। ব্যক্তিগত ৪৮ রানের মাথায় দুর্ভাগ্যজনক এক রান আউটের শিকার হন তামিম ইকবাল। তার খেলা বল ধরেই চোখের পলকে স্ট্যাম্পে ছুড়ে মারেন বোলার কটরেল। দ্রুত শুয়ে পড়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ইএসপিএনের ভাষায় এটা ছিলো ‘ম্যাজিক মোমেন্ট’। এর পরপরই মুশফিকুর রহিমকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ১ রানে থমাসের বলে শাই হোপের হাতে ক্যাচ দেন দলের অন্যতম এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৩/৩। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। সাকিব-লিটনের জুটি সহজেই দলকে পৌঁছে দিয়েছে জয়ের বন্দরে।
প্রথমে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুতেই সফলতা পান মাশরাফির সঙ্গে আক্রমণ শুরু করা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তার বলে ব্যক্তিগত শূন্য রাতে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দেন ক্রিস গেইল।
এরপর কিছুটা ধীরগতিতে খেলে ১১৬ রানের বড় জুটি গড়েন শাই হোপ ও এভিন লুইস। আস্তে আস্তে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৬৭ বল খেলে ব্যক্তিগত ৭০ রানে আউট হন লুইস। তার জায়গায় এসে নিকোলাস পুরান আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করলে তাকেও ফেরান সাকিব। দলীয় ১৫৯ রানে ক্যারিবিয়ানদের তৃতীয় উইকেটের পতন হয়।
একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকা শাই হোপের সঙ্গে যোগ দেন শিমরন হিটমার। ম্যাচের ৪০তম ওভারে এসে জোড়া আঘাত করে ক্যারিবিয়ানদের রানের লাগাম টেনে ধরেন মুস্তাফিজুর রহমান। ফেরান ২৬ বলে ৫০ রান করা হেটমায়ার ও সময়ের সবচেয়ে মারকুটে ব্যাটসম্যান আন্দ্রে রাসেলকে। ২৪৩ রানে ৫ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের চাকা সচল রাখার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। সাইফুদ্দিনের বলে মাহমুদউল্লার হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৪ বল থেকে সংগ্রহ করেন ৩৩ রান। দলীয় রান তখন ২৮২।