খবর সারাদিন রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জুমিনা বেগম-(১৯) নামে এক অন্তসত্বা গৃহবধুর মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। জুমিনা বেগম সরাইল সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আরিফাইল গ্রামের (সাঘর দিঘীর পাড়) ইমন মিয়ার স্ত্রী। পুলিশ রোববার রাতে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় জুমিনার পিতা আলাল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার সকালে সরাইল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ইমন মিয়া ও তার স্বজনরা জুমিনা আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করলেও জুমিনার পিতা আলাল মিয়ার দাবি ১০ হাজার টাকা না দেয়ায় স্বামী ও শ্বাশুড়ির গালিগালাজ ও মানসিক নির্যাতনের কারনে জুমিনা আত্মহত্যা করেছে।
থানায় দায়ের করা মামলার এজহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্টাপাড়ার আলাল মিয়ার মেয়ে জুমিনার সাথে এক বছর আগে একই ইউনিয়নের দক্ষিণ আরিফাইল গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে ইমন মিয়ার-(২২) বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ ইমনকে অনেক মালামাল দিয়েছেন আলাল মিয়া। বাকি ছিল একটি সুকেস। এই সুকেসটির জন্যই দীর্ঘদিন ধরে স্বামী ও শ্বাশুড়ি জুমিনাকে চাপ দিয়ে আসছিলো। জুমিনাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দও মানসিক নির্যাতন করতো তারা।
গত রোববার ও সুকেস নিয়ে জুমিনাকে গালমন্দ করেন ইমন ও তার মা। বিকেল ৪ টার দিকে আলাল তার মেয়েকে ফোন দিলে জুমিনা কেঁদে বাবাকে বলে সুকেস দেয়ার জন্য স্বামী ও শ্বাশুড়ি তাকে খুব চাপ দিচ্ছে। তারা সুকেসের পরিবর্তে ১০ হাজার টাকা চায়। টাকাটা তাদের খুবই প্রয়োজন।
আলাল মিয়া তার কন্যা জুমিনা বেগমকে বলেন, আগামী শনিবার ইমনকে নিয়ে তার বাড়িতে গেলে ১০ হাজার টাকা দিয়ে দিবে।
সন্ধ্যায় আলাল মিয়া খবর পায় জুমিনা মারা গেছে। তিনি ইমনের বাড়িতে গিয়ে কাউকে না পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন জুমিলার লাশ নিয়ে বসে আছেন শ্বাশুড়ি নাজমা বেগম। পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে শ্বাশুড়ি নাজমাকে গ্রেপ্তার করে ও রাত ১২টায় হাসপাতাল থেকে জুমিনার লাশ উদ্ধার করে।
ইমন মিয়া ও তার মা নাজমা বেগম জানান, জুমিনা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
জুমিনার বাবা আলাল মিয়া বলেন, সুকেসের বদলে ১০ হাজার টাকা চাওয়া মাত্র না দেয়ায় জুমিনাকে তার স্বামী ইমন ও শ্বাশুড়ি নাজমা বেগম গালাগাল ও মানসিক নির্যাতন করতো।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছি। স্বামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।